জামালপুরে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের অবহেলার কারণে শিশুর মৃত্যু। 

doinikjamalpurbarta

এম.এইচ.রিয়াদ জামালপুর :

জামালপুরে চিকিৎসা অবহেলায় এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে সেই মৃত শিশুটির মরদেহ নিয়ে হঠাৎ জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবে হাজির হয় তার পরিবার ও স্বজনরা।

জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মাদারগঞ্জ উপজেলার তারতাপাড়া গ্রামের ভ্যান চালক সুজন আকন্দ তার চতুর্থ সন্তান ১ বছর ৯ মাস বয়সী ছেলে শিশু আব্দুর রহমানকে অসুস্থ অবস্থায় গতকাল শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

পরে শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সকালেই শিশুটিকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।

এরপর সন্ধ্যায় শিশুটির মৃত্যু হয়। রাতে মৃত শিশুটিকে কোলে নিয়ে শিশুর বাবা সুজন আকন্দ, চাচা তারিকুল ইসলাম ও অন্যান্য স্বজনরা হঠাৎ জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবে এসে উপস্থিত হয়।

তারা অভিযোগ করেন, শিশুটিকে ভর্তি করার পর তাকে কোনো চিকিৎসা দেয়া হয়নি। নার্সদের বাববার বলা হলেও তারা শিশুটিকে অক্সিজেন দিতে সহায়তা করেনি। শিশু ওয়ার্ডে অক্সিজেন প্রদানের ব্যবস্থা থাকলেও উল্টো তাদেরকেই অক্সিজেন দিয়ে নিতে বলে কর্তব্যরত নার্সরা।

কিন্তু রোগীর স্বজনরা এ বিষয়ে অভিজ্ঞ না হওয়ায় শিশুটিকে অক্সিজেন সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি।

মৃত শিশুর বাবা সুজন আকন্দ চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলার কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করে দোষীদের বিচার দাবি করেন।

এদিকে মৃত শিশুর মরদেহ নিয়ে প্রেসেক্লাবে আসার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়। প্রশ্ন ওঠে হাসপাতালে রোগীদের সেবা প্রদানে কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্যদের যথাযথ দায়িত্ব পালন নিয়ে।

এব্যাপারে রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীম ইফতেখার বলেন, খুব নাজুক অবস্থায় শিশুটি হাসপাতালে ভর্তি হয়, তার জ্বর ও খিচুনি ছিলো। এটিকে সেলিব্রাল ম্যানিজাইটিস বলে, শুরু থেকেই যদি সঠিক চিকিৎসা করা না হয় তবে খিচুনি হয়ে শিশু মারা যায়। ভর্তির পরই শিশুটিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখে এবং চিকিৎসা দেয়া।

শিশুটির পিঠের নিচের দিক থেকে স্নায়ুুরস নিয়ে পরীক্ষা করার পরিকল্পনা ছিলো, শিশুটি খুব বেশি দুর্বল থাকায় দুই-একদিন এন্টিবায়োটিক দিয়ে কিছুটা সুস্থ হলে এই পরীক্ষা করার কথা ছিলো। কিন্তু সন্ধ্যায় খিচুনি উঠে শিশুটি মারা যায়। শিশু ওয়ার্ডে ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশী রোগী ভর্তি থাকায় অনেক সময় কর্তব্যরত নার্সরা বিরক্তি প্রকাশ করে, এই শিশুটির ক্ষেত্রেও হয়ত এমনটি ঘটেছে।

এদিকে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মাহফুজুর রহমান সোহান জরুরি সভা ডেকেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

SHARES

Picture of Prabhatitelevision

Prabhatitelevision

ফেসবুকে অনুসরণ করুন

আরো পোস্টঃ